শুক্রবার, ০৮ অগাস্ট ২০২৫, ০৮:৫৮ অপরাহ্ন

সিরাজগঞ্জে বন্যার পানিতে ভাসছে মানুষ

মোঃ ইসলাম হোসেন, জেলা প্রতিনিধি সিরাজগঞ্জ::

শুরু হয়ে গেছে নদী পাড়ের মানুষের ভাঙ্গা গড়ার খেলা, নির্বাক দৃষ্টিতে দেখা চিরচেনা নদী ভাঙ্গা সব হারানো মানুষের আর্তনাদ, আহাজারি কান্নার মিছিল, দিনরাত না খেয়ে থাকা ক্ষুধার্ত শিশুর কান্নার-শব্দে নিশ্চুপ আধাঁরে নিরোবতা, খোলা আকাশের নিচে জরাজীর্ণ মস্তিষ্ক ক্লান্ত শরীরে, ক্ষুধার্ত নারীর পড়ে থাকতে দেখা। বর্ষার শুরুতেই যমুনা নদীর ভয়াবহ রাক্ষুসী রূপ ধারণ করেছে। প্রতিদিনই রাক্ষুসী যমুনা গিলছে বসতভিটা, সরকারী-বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ব্রীজ কালভার্ট-আবাদি জমিসহ অসংখ্য স্থাপনা। বাপ-দাদা’র চিরচেনা বসতভিটা হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছে ভাঙ্গন কবলিত এলাকার মানুষ।

তথ্য অনুসন্ধানে জানা যায়, উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও প্রবল বৃষ্টির কারণে সিরাজগঞ্জ জেলার কাজীপুর, বেলকুচি, চৌহালী, শাহজাদপুর, তাড়াশ, রায়গঞ্জ, উল্লাপাড়া ও সিরাজগঞ্জ সদরের, ঝাঐখোলা, বাহুকা, সিংড়াবাড়ি বাঐখোলা, পাটগ্রাম, গান্দাইল, রতনকান্দি শুভগাছা, খুশকিয়া, পাটাগ্রাম, কুড়ালিয়া গুচ্ছগ্রাম, পূর্ব খুকশিয়া, মহনপুর, বাঙ্গালা, উধুনিয়া, বড় পাঙ্গাসী নলকা, সহ অসংখ্য গ্রাম বর্ষার পানিতে তলিয়ে গেছে এছাড়াও ফসলি জমি,রাস্তাঘাট, ঘরবাড়ী, স্কুল, মসজিদ মাদ্রাসা, ব্রীজ, কালভাট, বৈদ্যুতিক খুঁটি গাছপালা গৃহপালিত পশু গরু, মহিষ, হাঁস-মুরগি, সহ ব্যাপক আকারে ক্ষয়ক্ষতি ও যোগাযোগ ব্যাবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ায় খাবার যোগাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে বন্যাকবলিত মানুষের।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন যাবত যমুনা নদী থেকে অপরিকল্পিত ও অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলনের কারণে ভাঙনের তীব্রতা বেড়েছে তাছাড়া ভাঙন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কার্যকর কোনো পদক্ষেপ না থাকায় দুশ্চিন্তায় দিন কাটছে এবং জনমনে ক্ষোভ বিরাজ করছে।ঘরবাড়ি হারিয়ে মানুষ বাঁধের ওপর আশ্রয় নিয়েছে এই অঞ্চলের প্রায় দশ হাজারেরও বেশি মানুষ পানি বন্ধি হয়ে পড়েছে।

এ বিষয়ে সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী জাকির হোসেন এর কাছে মুঠফোনে জানতে চাইলে তিনি জানান, বিপদ সীমার ১০৫ সেন্টিমিটার অতিক্রম করে ভারতের আসামে প্রবল বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢলের কারণে যমুনা নদীর উজানে পানি যেভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে, তাতে দু-একদিনের মধ্যে যমুনা নদীর পানি বিপৎসীমা ছাড়িয়ে যাবে অতিতের সব রেকর্ড ভাঙতে পারে। এমত অবস্থায় আমরা বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলা করার জন্য সব রকম ব্যাবস্থা নিয়েছি। বাঐখোলা বাঁধ রক্ষায় বালুর বস্তা ফেলার কাজ শুরু হয়েছে। দুই কিলোমিটার নদীর তীর সংরক্ষণ কাজের দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। এরই মধ্যে কাজের ওয়ার্কঅর্ডার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। পানি কমলে কাজ শুরু হবে। আগামী বছর গুলোতে আর ভাঙন থাকবে না বলে জানিয়েছেন।

সংবাদটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2024  Ekusharkantho.com
Technical Helped by Curlhost.com